ছবির নাম ‘একটুকু বাসা’।মিষ্টি প্রেমের গল্প হলেও হাজারো মজা দিয়ে ঠাসা। প্রধান চরিত্র ছাড়া আর যাদের পদার্পন ঘটল তারা ছবির রাশ নিজেদের হাতে তুলে নিলেন। এঁদের শিরোমণি ভানুবাবু, সঙ্গে অনুপ কুমার, রবি ঘোষ, জহর রায়, শ্যাম লাহা, হরিধন মুখোপাধ্যায়, শীতল বন্দ্যোপাধ্যায়, অজিত চট্টোপাধ্যায়, রেনুকা দেবী, বঙ্কিম ঘোষ, অমূল্য সান্যাল ও অরুন চৌধুরী।
ভাবুন ব্যাপারটা, একেবারে ‘নরক গুলজার’ যাকে বলে। অভিনেতারা পাল্লা দিয়ে এ-ওকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফল হচ্ছে মারাত্মক। ধরুন, শট চলছে, কিন্তু তা শেষ হওয়ার আগে নিজেরাই হো-হো করে হেসে সব মাটি করে দিচ্ছেন।
আরও একটা বিপত্তি দেখা দিল। টের পেলাম কাজ করতে করতে অচিরেই এঁদের মধ্যে একটা অপূর্ব সখ্যতা তৈরি হয়েছে। প্রোফেশনাল নয়,ব্যক্তিগত সম্পর্ক।ফলে এরা যত না চিত্রনাট্যে মন দিচ্ছেন তার থেকে একশো গুণ দিচ্ছেন জমজমাটি আড্ডায়।
অগত্যা পরিচালককে বলতে হল যে এতে কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। ভানুবাবু বললেন, “আইচ্ছা এক কাম করেন, আমরা বাইরে গিইয়া বইতাসি, আপনের যখন যারে প্রয়োজন, ডাইকা লইবেন।” তা-ই হল।
অচিরেই দেখা গেল, কল টাইমের এক-দেড় ঘন্টা আগে এঁরা স্টুডিওতে চলে আসছেন প্রাক-শুটিং আড্ডা দিতে। তরুনবাবু ভানুবাবুকে বললেন “এ তো আচ্ছা জ্বালাতন, আপনারা এত আগে এলেও মেকাপম্যান তো অনেক দূরে থাকে, সে তো এত আগে আসতে পারবে না। এত তাড়াতাড়ি আসার দরকার কী?”
ভানুবাবুর ঝটিতি উত্তর, “আপনে পরিচালক, দেরি কইরা আইলে হাজারবার বকাঝকা করতে পারেন কিন্তু নিজেগো ইচ্ছায় যদি আর্লি হাজিরা দিই, তার জন্য তো বকুনি দেওনের রাইট আপনের নাই”।
অগত্যা আমার মুখে কুলুপ। এই নির্মল আনন্দের দিনগুলি স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে।
অনুলেখন – বাসবী বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটক